মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। বন্ধ রয়েছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা যেনো পিছিয়ে না পরে সে জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নানান দিক নির্দেশনা দিচ্ছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষামন্ত্রণালয় অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে আহবান জানিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি।
শিক্ষামন্ত্রণালয়ের আহবানে সাড়া দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ উদ্যোগ নিয়েছেন অনলাইনে ক্লাস নেয়ার। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টির অধিভুক্ত প্রায় ২ হাজার ২৬০ টি কলেজ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি অনলাইনে ক্লাস নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে বেশ কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য।
সেগুলো হলো-
১। যে সব কলেজের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে তারা জরুরি ভিত্তিতে অনলাইন ক্লাস চালু করবে। যেসব কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন-লাইন ক্লাস সুবিধা নেই, তাদেরকেও দ্রুত এই সুবিধার আওতায় আসতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরী করা মোবাইল অ্যাপস কিংবা জুম সফটওয়্যার ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অন-লাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী কলেজসহ বেশ কয়েকটি কলেজ/প্রফেশনাল প্রতিষ্ঠান অন-লাইন ক্লাস শুরু করেছে।
২। কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ সমূহে কোনো সেশনজট ছিল না। সেই ধারাবাহিকতা বহাল রাখতে লকডাউন শেষে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের নিমিত্তে প্রতিটি শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ঘরে বসে পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে বলা হচ্ছে। এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার পর যেন একের পর এক পরীক্ষা নেয়া যায় তার সকল প্রস্তুতি কলেজ ও শিক্ষার্থীদের থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সেশনজট নিরসনে আগে যেমন আমরা ক্রাশ প্রোগ্রাম করে সফল হয়েছি। সেভাবে মেথড এখানেও এপ্লাই করতে হবে।
৩। শিক্ষার্থীদের মনে রাখা উচিত কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সিংহভাগ কারিকুলাম শিক্ষার্থীকে তার নিজ উদ্যোগে সম্পন্ন করতে হয়। এই মহামারী চলাকালীন শিক্ষার্থীদের ধৈয্য ও দ্বায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং নিজ নিজ বাড়িতে বসে তার কারিকুলাম অনুযায়ী পাঠগ্রহণ করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে।
৪। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনলাইন কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। ছুটি দীর্ঘায়িত হলে নতুন করে সেশনজটে না পড়তে পরীক্ষা ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের প্রস্তুতি নেয়ার জন্যে শিক্ষকদের কাজ করে যেতে হবে।
৫। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপরোক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে বিশেষ সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ শে এপ্রিল ২০২০ তারিখ বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনলাইনে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই সভা বিকেল ৪টায় শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা সোয়া ৬ টা পর্যন্ত।
এসময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাববুব হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রমুখ।
মন্তব্য করুন